* আবার জমে গেল । "—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আড্ডা কিভাবে আবার জমে গেল তা লেখো ?
উঃ) সৈয়দ মোস্তফা সিরাজের ভারত বর্ষ ছোটগল্পে আমরা দেখি যে , পৌষ মাসের অকাল দুর্যোগের মধ্যে রং বাংলার এক ছোট্ট বাজারের এক চায়ের দোকানে বসে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল কয়েকজন গ্রামবাসী । আড্ডায় তাদের আলোচনার বিষয় ছিল বোম্বাইয়ের অভিনেতা অভিনেত্রী , মুখ্যমন্ত্রী , গায়ক , ইন্দিরা গান্ধী ইত্যাদি গ্রামেরই বাসিন্দা সড়া বাউরী । এমন সময় এক থুথ্থুড়ে ভিখারি পড়ি ভিজতে ভিজতে সেখানে এসে উপস্থিত হলে সে আড্ডায় ছেদ পরে । আরাম করে চা খাওয়ার পর বৃদ্ধা বসে থাকা সকলের মুখের দিকে নিক শব্দে চাইলে সে কোথা থেকে এসেছে , তা একজন জিজ্ঞাসা করে । বুড়ি মেজাজের সঙ্গে জানায় সে কথায় তোমাদের কাজ কি বা ছাড়া ? " এ কথা শুনে সবাই একসঙ্গে হেসে ওঠে এবং একজন গ্রামবাসী বুড়িকে ব্যঙ্গ করে টাট্টু ঘোরার সঙ্গে তুলনা করে । বৃদ্ধা তখন তাদের বাবার নাম নিয়ে গালাগাল দেয় । আজেবাজে কথা বলার ব্যাপারে সে হুঁশিয়ারও করে দেয় সবাইকে এরপর সে চায়ের দাম মিটিয়ে দিয়ে নড়বড় করে হাঁটতে হাঁটতে রাস্তায় নেমে যায় ।
চায়ের দোকানের আড্ডা ধারীরা তখন চিৎকার করে তাকে উদ্দেশ্য করে জানায় যে , নির্ঘাত মরবে সে । সে কথা শুনে ঘুরে দাঁড়িয়ে পরি তাদের এবং তাদের শত পুষ্টির মৃত্যু কামনা করে। তারপর সে বৃষ্টি বাদলের মধ্যে বটতলায় গিয়ে আশ্রয় নিলে তা নিয়েও আলোচনা চলতে থাকে। কয়েকজন গ্রামবাসী বলে বটগাছ তলার পরিবর্তে বারোয়ারি তলায় আশ্রয় নিলেই বুড়ি ভালো করত ।
এইভাবে বুড়িকে নিয়ে অনেক কথা এসে পড়ায় আড্ডা আবার জমে ওঠে ।
* ভারতবর্ষ গল্পটির নামকরণের সার্থকতা বিচার কর ?
উঃ ) ভারতবর্ষ গল্পের নামকরণ অংশটি দেখো
* ছোট গল্প হিসেবে ভারত বর্ষ এর সার্থকতা বিচার কর ?
উঃ) সৈয়দ মোস্তফা সিরাজের ভারতবর্ষের ছোটগল্পে পৌষের অকাল দুর্যোগে রাং বাংলার একটি ছোট্ট বাজারের পাশের বটগাছ তলায় আশ্রয় নেয় পরিচয়হীন এক থুতুড়ে বুড়ি ভিখির । দুর্যোগ কাটলে সেখানে স্পষ্ট হয়ে পড়ে থাকা বিদ্যাকে মৃত ভেবে হিন্দু গ্রামবাসীরা চৌকিদারের পরামর্শে বাসের বাছাই করে নিয়ে গিয়ে শুকনো নদীর চরায় ফেলে দিয়ে আসে । কিন্তু সেদিন বিকেলের মুসলমানরা সেই মাচায় করে বুড়ির দেহটা কবর দিতে বাজারে নিয়ে আসলে সেইসবের অধিকার নিয়ে দু সম্প্রদায়ের সংঘাত বাদে ।
একসময় তা দাঙ্গার দিকে বাঘ নাই কিন্তু হঠাৎই দু'দলের সশস্ত্র জনক তাকে হতচকিত করে ভরি জেগে উঠে দাঁড়ায় । একজন বোর্ডের ধর্ম পরিচয় জানতে চাইলে কুর্ধপুরী তাদের গাল দিয়ে নড়বড় করতে করতে ক্রমশ অদৃশ্য হয়ে যায় ।
গ্রাম সংলগ্ন বাজার কে কেন্দ্র করেই এ গল্পের দুদিনের এই কাহিনী গড়ে উঠেছে বলে স্থান কাল ঘটনা গত ঐক্য এ গল্পে রক্ষিত হয়েছে । তাছাড়া মাঝারি আয়তনের এই গল্পে ঘটনা ঘনঘটা অতিকতন বহু চরিত্রের সমাবেশ তত্ত্ব বা উপদেশ অনুপস্থিত । এ গল্পের বৃদ্ধা চরিত্রের মধ্য দিয়ে লেখক ভারত মাতার প্রাচীন্যত্ত এবং অসহায়তা যেমন প্রকাশ করেছেন , তেমনি দেখিয়েছেন যে , এ দেশে শুধুমাত্র হিন্দু বা মুসলমানের নয় , এ দেশে অপ্পা মোর ভারতবাসীর । গল্পের সমাপ্তিতে বৃদ্ধার জেগে ওঠার মাধ্যমে লেখক পাঠকদের চমকিত ও করে দিয়েছেন ।
সুতরাং ' ভারতবর্ষ ' নিংসন্দেহে একটি শিল্প সার্থক ছোট গল্প ।
* ভারত বর্ষ ছোটগল্পের বাজারটি কোথায় অবস্থিত ছিল ? এই বাজারটির বর্ণনা দাও ।
উঃ) সৈয়দ মোস্তফা সিরাজের ভারত বর্ষ গল্পটি গড়ে উঠেছে রাম বাংলার একটি ছোট্ট গ্রাম্য বাজার কে কেন্দ্র করে । পিচের সড়ক আদিকালের এক বট গাছের পাশে যেখানে বাক নিয়েছে, সেখানে গড়ে উঠেছিল বাজারটি ।
বাজারটিতে সব মিলিয়ে ছিল তিনটি চায়ের দোকান , দুটো সন্দেশের দোকান , তিনটি বস্ত্র বিপণি , একটা মনিহারের দোকান এবং দুটি মুদিখানা । এছাড়াও একটি আরত এবং একটি হাঁস কিং মেশিনের ও দোকান ছিল সেখানে বাজারটির উপরে ছিল বিরাট একটি মাঠ এবং পেছনে ছিল বাস বোন চারপাশে গ্রামের মানুষ প্রতিদিন এখানেই কেনাকাটা করতে আসত ।
পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও বাজারে বিদ্যুৎ ছিল । সকাল থেকে শুরু করে রাত ন'টা পর্যন্ত এই বাজার খোলা থাকতো । চারপাশে গ্রামের পুরুষদের কাছে এটা তাই একটা আড্ডার জায়গাও ছিল । সভ্যতার ছোট্ট উন্নয়নের পাশে হাত পা শেখে নিতে তারা প্রায় বাজারে আসতো , বিশেষত সন্ধ্যায় , যখন গ্রামগুলি থাকতো প্রায়োদ্ধকার বাজারের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষত্ব চায়ের দোকানে বসে তারা গল্পগুজুর করে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিত ।
বোম্বাইয়ের গায়ে গায়িকা বা অভিনেতা অভিনেত্রী অথবা দেশের রাজনৈতিক নেতা নেত্রী ইন বাসস্থানীয় মানুষদের নিয়ে এসে আড্ডা চলতো । রাত নটায় বাজার ফাঁকা হয়ে গেলে জনহীন বাজারের বৈদ্যুতিক আলোয় দু-একটা নেড়ে কুত্তা কে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত । একটা দুটো ট্রাক কখনো কখনো রাস্তা দিয়ে শহরের দিকে চলে যেত । রাতের নিস্তব্ধ বাজারের পাশের বটগাছ থেকে প্যাঁচার ডাক শোনা যেত ।
* ভারতবর্ষের ছোটগল্পের কাহিনীটি সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লেখ ?
উঃ) সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ভারত বর্ষ ছোটগল্পে পৌষের অকাল দুর্যোগে রামবাংলার এক ছোট্ট বাজারের এক চায়ের দোকানে বসে অলস কয়েকজন গ্রামবাসী আড্ডা দিচ্ছিল। তখন এক থুতুড়ে ভিখারিনী বিদ্যা সেখানে ভিজতে ভিজতে ঢুকে চা খেতে । সেখানে সেই অসহায় বিদ্যার সঙ্গে কৌতুহলী আড্ডা ধারীরা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করলে তেজ ও মেজাজের সঙ্গে সঙ্গে সেই বৃদ্ধা তাদের অহেতুক আগ্রহের প্রতিবাদ করে এবং তাদের সাপোর্ট করে ।
চায়ের দাম মেটিয়া বিদ্যা ভিজতে ভিজতে পাশের বটতলায় গিয়ে আশ্রয় নেয় পরদিন সকালে রোদ উঠলে সেখানে বুড়িকে অসারভাবে পড়ে থাকতে দেখে হিন্দু গ্রামবাসীরা তার দেহের তাপমাত্রা এবং নারী পরীক্ষা করে তাকে মৃত ভাবে এবং চৌকিদারকে খবর দেয় । তারপর চৌকিদারের পরামর্শ অনুযায়ী বুড়ির দেহটা বাঁশের ভাষায় পড়ে কয়েকজন হিন্দু বয়ে নিয়ে গিয়ে নদীর চূড়ায় ফেলে আসে কিন্তু সেদিন বিকেলের মুসলমানরা সেই মাচায় করে বুড়ির দেহটা কবর দিতে বাজারে নিয়ে এলে সেইসবের অধিকার নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম সংঘাত বাদে ।
বোর্ডের মৃত দেহকে কেন্দ্র করে দুই সম্প্রদায়ের সশ্রেষ্ঠ জনতার মধ্যে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার পরিস্থিতি যখন তৈরি হয় , তখনই সবাইকে অবাক করে দিয়ে বুড়ি নড়েচড়ে উঠে দাঁড়ায় বিষ্ণুর জনতার একজন বুড়ির হিন্দু না মুসলমান তা জিজ্ঞাসা করলে জানাই যে , তাদের দেখার চোখ নেই তারপর নড়বড় করে হাঁটতে হাঁটতে ক্রমশ অদৃষ্ট হয়ে যায় সে ।
* ভারতবর্ষ গল্পের মোল্লা সাহেব এবং ভট্ট চার্জ মশাই এর চরিত্রে তুলনামূলক আলোচনা কর ?
উঃ) ৬৪ মোস্তফা সিরাজের ভারতবর্ষ গল্পের মোল্লা সাহেব এবং ভট্টাচার্য মশাই এই দুজন দুই সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীদের নেতা হিসেবে নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন চৌকিদারের পরামর্শে মৃত ভেবে বাঁশের চাং তোলার শুকনো নদীর যেদিন ফেলে আসা হয় ,
সেদিন সকালবেলায় উভয়ই বটতলায় বাসস্ট্যান্ডে আসেন এবং মুমূর্ষ বুড়িকে দূর থেকে দেখে একই বাসে করে শহরে যান বিকেলে ফিরে এসে মোল্লা সাহেব যখন শুনেন যে মৃত বুড়িকে নদীর চরে ফেলে দেওয়া হয়েছে তখন তিনি সে মৃতদেহ কবর দিতে আনাবার ব্যবস্থা করেন জানান যে বুড়ি মুসলমান ।
ঠিক সেই সময় ভটচাঁদ মশাই শব্দবাস থেকে নেমে সেই ভিড়ের মধ্যে ঢোকেন এবং মোল্লা সাহেবের কথায় প্রতিবাদ করে জানান যে সকালের মোল্লা সাহেবের সঙ্গে একই বাসে ওঠার আগে তিনি মুমূর্ষ বুড়িকে শ্রী হরি জব করতে স্পষ্ট শুনেছেন । সুতরাং এভাবেই দুই সম্প্রদায়ের দুই নেতার সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করেন শুধু তাই নয় মোল্লা সাহেবের পর নিজের সম্প্রদায়ের মানুষকে প্ররজিৎ করতে জেহাদ অর্থাৎ ধর্মযুদ্ধের ঘোষণা করেন ।
উল্টোদিকে ভটচার্জ মশাই ও একইভাবে হিন্দু জনতাকে প্ররোচিত করতে যবন হত্যার উদ্দেশ্যে মা কালীর আবির্ভাব আহ্বান করতে থাকেন । সুতরাং মোল্লা সাহেব এবং ভট্টাচার্য দুজনের কেউই মুমূর্ষুবিদাকে বাঁচাতে সচেষ্ট হয়নি অথচ তার মৃত্যু হয়েছে ভেবে তার মৃতদেহের অধিকার নিয়ে তারা লড়াই করেছেন। তারা কেবল মিথ্যাচারী করেননি । উগ্র এবং ধর্মান্ধ হয়ে নিজে নিজে সম্প্রদায়ের সহজ সরল মানুষকে ভয়ঙ্কর দাঙ্গার প্ররোচিত করেছেন ।
* সেই সময়ে এল একবুড়ি ।"— বুড়িটির চেহারার পরিচয় দাও । গল্পের শেষে বুড়িটির ভূমিকা সম্বন্ধে আলোচনা কর ?
উঃ) অনেকবার আলোচনা করা হয়েছে যদি বর্ণনা না করতে পারো তাহলে প্রশ্নটা লিখে কমেন্ট কর উত্তর দিয়ে দেওয়া হবে। কোন অসুবিধা নেই।
* বিজ্ঞ চৌকিদারের পরামর্শ মানা হলো ।"— চৌকিদার কি পরামর্শ দিয়েছিল ? সেই পরামর্শ মেনে কি করা হয়েছিল ?
উঃ ) এই প্রশ্নটাও আলোচনা করা হয়েছে কবিতা অবলম্বনে তা বর্ণনা কর যদি না পারো তাহলে প্রশ্নটা লিখে কমেন্ট কর উত্তর দিয়ে দেওয়া হবে
Post a Comment