প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর


প্রাকৃতিক ভূগোল অধ্যয়নের গুরুত্বপূর্ণ  প্রশ্নোত্তর 

          

     প্রাকৃতিক ভূগোল 

    ( শাস্ত্র রূপে ভূগোল)

            


        প্রথম ভূগোল শব্দকে ব্যবহার করেন ?

    প্রাচীন গ্রিক পন্ডিত এরাটোস্থেনিস প্রথম ভূগোল শব্দটিি ব্যবহার করেন (২৩৪)  ।

     

ভূগোল হল গণিত শাস্ত্রের একটি অংশ মাত্র এই কথাটি কে বলেন ?

    ভেরেনিয়াস বলেন ভূগোল হল গণিত শাস্ত্রের একটি অংশ মাত্র (১৬২২) ।


ভূগোলকে সাধারণভাবে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কি কি 

ভূগোলকে সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা যায় (১) প্রণালীবধ্য ভূগোল।      (২) আঞ্চলিক ভূগোল 


   প্রণালী বদ্ধ  ভূগোল কাকে বলে ( systematic Geography):

         যখন ভূগোলে বিভিন্ন উপাদানগুলিকে পর্যায়ক্রমিকভাবে    এবং অন্তর্নিহিত ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী  জানা ও ব্যাখ্যা করা যায় তখন তাকে প্রণালীবদ্ধ্ ভূগোল বলে । 


 এই ভূগোলের মূল আলোচ্য বিষয় হলো প্রকৃতি ও                                                                মানুষ 

প্রপ্রণালীবদ্ধ  ভূগোলের দুটি প্রধান শাখা (১)       প্রাকৃতিক (physical)          ও  (২) মানবীয়                                        (Human) ।        


(A) প্রাকৃতিক ভূগোলের বিভিন্ন শাখা সমূহ গুলি লেখ  । 

   ক)  জলবায়ু বিদ্যা 

   খ) ‌‌সমুদ্র বিজ্ঞান 

   গ) জলবিজ্ঞান 

           জলবায়ু বিদ্যা (Climatology) 

      আবহাওয়া বিদ্যার অন্তর্গত হলো জলবায়ু বিদ্যা ।

   মানবীয় জীবনে জলবায়ুর প্রভাব সর্বাধিক ।

           সমুদ্র বিজ্ঞান ( Oceanograpy ) 

          সমুদ্রর হল সম্পদের এক বিশাল ভান্ডার । মানবীয় জীবনেেে এর গুরুত্ব অপরিসীম ।


(B)  মানবীয় ভূগোল  এর শাখা সমূহ : 

     ক) অর্থনৈতিক ভূগোল 

      খ) সামাজিক ভূগোল 

       গ) জনসংখ্যা ভূগোল 

    অর্থনৈতিক ভূগোল (Economic Geography) কাকে বলে  : 

            মানুষের সর্বস্তরের কর্ম ধারা এবং কর্ম ধারার সঙ্গে যুক্ত অর্থনৈতিক অবস্থা মানবীয় ভূগোলের যে শাখায় আলোচনা করা হয় তাকে অর্থনৈতিক ভূগোল বলে ।               মানুষের অর্থনৈতিক কাজকর্ম বহু বিস্তৃত 


    সামাজিক  ভূগোল   (Social Geography) কি :

          সমাজবদ্ধ জীবের বৈশিষ্ট্য এই ভূগোলে প্রকাশিত হয়  ।  উদাহরণ গোষ্ঠী, জাতি ,বর্ণ , ধর্ম  ইত্যাদি 


 আঞ্চলিক ভূগোল   (Regional Geography) কাকে বলে : 

         প্রাকৃতিক ও মানবীয় উপাদান গুলির সমধর্মী বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে  পৃথিবীকে টুকরোো টুকরো অংশে ভাগ করা হয় যাকে বলা হয় অঞ্চল । এরকম এক একটা অঞ্চলের ভূ প্রাকৃতি, জলবায়ু , মাটি , সামাজিক প্রভৃতি দিকগুলির বর্ণনা করা হয় ।        একে বলে আঞ্চলিক ভূগোল । 


আঞ্চলিক ভূগোলের প্রধান শাখা সমূহ গুলি কি কি :

        ১) অঞ্চল সমীক্ষা  ‌‌

         ২)  আঞ্চলিক পরিকল্পনা 

          ৩) আঞ্চলিক বিশ্লেষণ 


ভৌগোলিক তথ্য সংক্রান্ত টেকনিক সমূহ , যেমন - GPS - এর  পুরো নাম কি  , global positioning system 

        Gis ,  দূর সংবেদন  ( Remote Sensing ) । 



                  জল সম্পদ                               

     

     কোন জলশেচ পদ্ধতিতে জলের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয় ? 


       অনিয়ন্ত্রিত জল সেচ  পদ্ধতিতে জলের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয় । 


  মেরু প্রধান অঞ্চলে কোন ধরনের জলসেস পদ্ধতি প্রচলিত ? 

    মেরু প্রধান অঞ্চলে অতি নিয়ন্ত্রিত জলসেচ পদ্ধতি প্রচলিত   ।

             নীল গ্রহ কাকে বলে ? 

            পৃথিবীকে নীল গ্রহ বলে ।

             

 বিশ্বের সর্বাধিক শেচ সেবিতো জমির দেশের নাম লেখ ? 


   বিশ্বের সর্বাধিক শেচ সেবিতো  জমির দেশ হলো ভারত  । 


  ভারতে প্রধান জলশেচ পদ্ধতি কি ?

     ভারতের প্রধান জলসেচ পদ্ধতি হল খালসেজ ।


     ভারতের দীর্ঘতম খালের নাম লেখ ?

   ইন্দিরা গান্ধী খাল হলো ভারতের দীর্ঘতম খাল ।


  নলকূপ জলের প্রধান উৎস কি ? 

নলকূপ জলের প্রধান উৎস হল ভৌমজল  ।


অতিরিক্ত জলসেচের ফলে মৃত্তিকার কি ক্ষতি হয় ? 

অতিরিক্ত জনসেচের ফলে মৃত্তিকা লবণাক্ত হয়ে পড়ে ।


এসওয়ান বাঁধের পেছনে যে জলধারাটি অবস্থিত তার নাম কি ? 

  এসওয়ান  বাঁধের পেছনে যে জলধারাটি অবস্থিত তার নাম নাসের জলাধার ।


      ক্যারেজ প্রথম জলসেচ কোন দেশে করা হয় ? 

  প্রথমে এই  জলো সেচ করা হয় পাকিস্তানে ।


         এসইউড বাঁধ কোন দেশে অবস্থিত ? 

 এই বাঁধটি  মিশরে অবস্থিত ।

                                

                              সেফি কি ?   

  মিশরের গ্রীষ্মকালীন শস্য চাষ সেফি নামে পরিচিত । 


দক্ষিণ ভারতের মূলত কোন পদ্ধতিতে জলোসেজ করা হয়। ? 

     জলাশয়ের মাধ্যমে ।  


দুটি নদীর মধ্যবর্তী অববাহিকার উচ্চভূমি কি নামে পরিচিত ? 

    জলবিভাজিকা নামে পরিচিত ।

  

কোন শেচ পদ্ধতিতে সমগ্র জমি জলমগ্ন থাকে ? 

       বিহোৎ স্তরের জল শেচ পদ্ধতিতে ।  


  ভারতে কূপ পদ্ধতিতে  জলসেচ সবচেয়ে বেশি হয় কোন রাজ্যে ?        

                     উত্তরপ্রদেশে । 


পাকিস্তানের বৃহত্তম বাঁধ কোনটি ?

                   তারবেলা বাঁধ ।


কোন পদ্ধতির জলসেচে জলের সর্বনিম্ন অপচয় হয় ? 

          বিন্দু পতন পদ্ধতিতে ।


   পৃথিবীর বৃহত্তম কৃত্রিম জলাধার এর নাম কি ? 

           নাসের জলাধার । 


        কোন দেশের জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশি ? 

             চীনের জনসংখ্যা প্রচুর বেশি । 


ইডেন খাল ভারতের কোন রাজ্যে অবস্থিত ? 

      পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত ।


বেসিরভাগ জমি সমুদ্র থেকে পুনর  উদ্ধার করা হয়েছে ?

        হল্যান্ডে বেশিরভাগ জমি সমুদ্র থেকে পুনর  উদ্ধার করা হয়েছে । 


মেসেঞ্জার বাঁধ কোন নদীর উপর অবস্থিত ? 

         ময়ূরাক্ষী নদীর উপর অবস্থিত । 


সুরঙ্গ কেটে তার মধ্যে দিয়ে জলসেচ করার পদ্ধতি  কি বলে ? 

     ক্যারেজ পদ্ধতি । 


        জলবিভাজিকা ব্যবস্থাপনের মুখ্য উদ্দেশ্য কি ?             

জলসম্পদ সংরক্ষণ ও মৃত্তিকা ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ ।

  হীরা বুধ বাঁধ কোন নদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে ? 

  মহানদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে । 


    ভাকরা নাঙাল  বাঁধ কোন নদীর উপর অবস্থিত ? 

     শতদ্রু  নদীর তীরে অবস্থিত ।


      কোন পদ্ধতিতে জলোসেচে  জলের সবচেয়ে বেশি অপচয় হয়  ? 

      বিন্দু পতন পদ্ধতিতে জলের সবচেয়ে বেশি                          অপচয়হয় ।

     

 জলোশেচ পদ্ধতির প্রকারভেদ :   কৃষি ক্ষেত্রেে জল সরবরাহ করার নানা পদ্ধতি আছে প্রধান তিনটি  সেচ ব্যবস্থা অন্তরর্গত  ।  

যেমন - 

ক) অনিয়ন্ত্রিত বা প্রাচীন জলোসেচ  পদ্ধতি ,

খ) নিয়ন্ত্রিত জলসেচ পদ্ধতি ।

গ) অতি নিয়ন্ত্রিত বা বিকল্প শেচ পদ্ধতি ।


  অনিয়ন্ত্রিত জলসেচ ব্যবস্থার  ও অসুবিধা :

  1) জলের অভাবে এই পদ্ধতিতে সারা বছর শেচ কাজ করা যায় না । 

  2) বৃষ্টির পরিমাণের ওপর সেচের জলের পরিমাণ নির্ভর করে ।

  3 ) একসঙ্গে খুব বেশি পরিমাণ জমিতে সেচ চাষ করা যায় না ।

  4) সেচের জলের পরিমাণ সিমিত হওয়ার এক বা দুটি শষ্য চাষ করা যায় না। 


  প্লাবন শেচ পদ্ধতি : (Flood irigation) -  এই পদ্ধতিতে খালের জলকে সরাসরি কৃষি জমিতে ঢুকিয়ে ; পাম্পের দ্বারা নদী , হ্রদ পুকুর থেকে জল তুলে এবং গভীর নলকূপের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চালিত প্রক্রিয়ায় ভৌম জল উত্তোলন করে সরাসরি জমিকে জল দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হয় । এক্ষেত্রে জমির উপর কয়েক ইঞ্চি জল দাঁড়িয়ে যায় । বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এইরকম শস্য চাষে প্লাবন শেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়       ধান চাষে জমিতে জল দাঁড়ানো দরকার ।  এই জাতীয় ফসলের জন্য  প্লাবন শেচ পদ্ধতির মাধ্যমে জলসেচ করা  হয় ।


 ক্ষুদ্র স্তরের সেচ ব্যবস্থার সুবিধা লেখ  :   এই শেচ ব্যবস্থার সুবিধা গুলি হল           

 ১) ষাঁড়ের উপযুক্ত ও অর্থনৈতিক ব্যবহার হয়  ।

 ২) জলের অপচয় রোধ  , ফলে জলের সংরক্ষণ ঘটে ।

  ৩) আগাছা কম জন্মায় ।

   ৪) মাটির কোন ক্ষয় হয় না । আল না থাকায় জমি নষ্ট হয় না ।

    ৫) গাছের রোদ ও পোকামাকড়ের সংক্রমণ সবচেয়ে কম হয় । 

    

 অতিরিক্ত জল শেচের ফলে কি কি বিপদ হতে পারে 

 (Dengers of Overwatering irrigation) : 

  •    কখনো কখনো প্রয়োজোনের অতিরিক্ত জলসেচ সর্ষের বিপদ ডেকে আনে । জলের পরিমাণ বেশি হলে মাটির ছিদ্র গুলি পূর্ণ হয়ে যায় , মাটি সম্পৃক্ত হয়ে ওঠে ।

1)  লবণ চঞ্চয় :   মাটিতে জল জমা হওয়ার বিভিন্ন প্রকাাার দ্রাবিভূত লবণ ( সোডিয়াম কার্বনেট , সোডিয়াম ক্লোরাইড , সোডিয়াম সালফেট ইত্যাদি )  বাষ্পীভবনের সাথে সাথে মাটির উপর চলেে  আসে‌‌ ও সঞ্চিত হয় ।
অতিরিক্ত লবণ জমা হলে মাটিকে খারকীয় করে দেয় । এতে উদ্ভিদের বৃদ্ধি বাধা পায় ও ফসল হ্রাস পায় ।


 2)   মাটির তাপমাত্রা হ্রাস :     জল জমে থাকায় মাটির ভেতরের উষ্ণতা কমে যায়় ।  ফলে কম উষ্ণতায় উপকারী ব্যাকটেরিয়ার কাজকর্ম ধীর গতি সম্পন্ন হয় । উদ্ভিদ নিজেদের পরিমান খাদ্য ঠিক সময় পায়না । 


      প্লাবন খাল ও নিত্যবহ খাল কাকে বলে 

                      (peranial canal) :  


  •   যখন উৎস মুখে লক গেটের ন্যায় কোন প্রকার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছাড়াই নদীর সঙ্গে খালকে সংযোগ করা হয় । এবং জোয়ারের সময় কিংবা বর্ষাকালে নদীতে জলের পরিমাণ বাড়লে বাড়তি জল দ্বারা জলের প্রবাহ বজায় থাকে তখন তাকে প্লাবন খাল বলে ।
         

           নলকূপ কি :     নলকূপ হলো ভৌম জল ভান্ডার থেকে পাইপের মধ্যেে দিয়ে জল উত্তোলনকারী কূপ ।


  কূপ ও নলকূপ সেচ ব্যবস্থার সুবিধা গুলি লেখ :

  1. এই ব্যবস্থার জলের অপচয় হয় না বললেই চলে ।    
  2.  বিস্তীর্ণ এলাকার সুবিধা জনক স্থানগুলিতে নলকূপ বসিয়ে সুষম ভাবে জল সেচ এই ব্যবস্থাই করা সম্ভব ।
  3.   কৃষক যখন যতটা পরিমাণে জমিতে জল ব্যবহার করবে সেই অনুপাতে সে খাজনা বা খরচ বহন করবে ।  খাল জলশেচ ব্যবস্থার মতো। কৃষককে সারা বছর ধরে খাজনা দিতে হয় না ।
 

 কুপ ও নলকূপ সেচ  ব্যবস্থার অসুবিধা গুলি লেখ :

  1.    ভৌম জল লবণাক্ত হলে  পাতকুয়া বাা নলকূপ দ্বারা শেষ করা যায় না ।                                        
  2.   কেবলমাত্র সিমিতে এলাকা শেচ  করা যায় । সাধারণত একটি নলকূপের দ্বারা ১ থেকে ৪ হেক্টর জমি জলসেচ করা যেতে পারে ।                   
  3. খাবার সময় ভৌম জলের স্তর অনেক নিচে নেমে যায় । ফলে খুব প্রয়োজনের সময় সেচের জল পাওয়া যায় না । 


      জল সংরক্ষণের কয়েকটি উপায় লেখ ?

  1.    বাধ ও জলাধার নির্মাণ :  উচ্চ প্রবাহের নদীতে বাদ দিয়ে কিংবা বড় জলাধার নির্মাণ করে বৃষ্টি ও বরফ গলা জলকে সঞ্চয় করা যেতে পারে ।                       
      তারপর ওই জলকে শেচ,  জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদি কাজে প্রয়োজন মত ও সোনিয়ন্ত্রিত ভাবে ব্যবহার করলে জলের সংরক্ষণ হয় ।

        2.   ভৌম জল আহরণ : যেসব এলাকায় ভৌম জলের পরিমাণ বেশি এবং এর ভান্ডার খুব সহজেই পরী পুড়িতো হয়  সেসব এলাকায় পৃষ্ঠদেশীয় জলের পরিবর্তে ভোমজল আহরণ ও ব্যবহার করলে খুব স্বাভাবিকভাবে জলের সাশ্রয় হয় ।


      জলের অপচয় রোধ কিভাবে করবে : 

 সেচের কাজে , গিওস্থালীর কাজে , কারখানা ও ব্যবস্থালে ব্যবহারের সময় জলের অপচয় ঘটে । 

জলের জাতে অপচয় না হয় তার জন্য কিছু কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার ।      যেমন-   1) কাপড় কাচা , বাসন পরিষ্কার ইত্যাদি কাজে নির্দিষ্ট পরিমাণে জল অনুযায়ী প্রত্যেককে জল বাধ্যতামূলক করা ।  

   2) জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য রাস্তার ধারে বসানো কল থেকে জল নেওয়ার পর কলের মুখ খোলা থেকে যায় । 

ফলে হাজার হাজার গ্যালন জল নষ্ট হয় । তাই সামাজিকভাবে মানুষের চেতনা বৃদ্ধি অবশ্যই দরকার ।

       





1 Comments

Post a Comment

Post a Comment

Previous Post Next Post